উজিরপুর(বরিশাল) প্রতিনিধি ঃ
বরিশালের উজিরপুরে সরকারি রেকর্ডীয় খালে জোর পূর্বক বাধ দিয়ে দখল করে ইরি বøকে পানি সেচ বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে। ইরি বøকে পানি সেচ বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা। এই ঘটনায় স্থানীয় কৃষক কবির হোসেন সরকারি খাল দখলমুক্ত রাখার জন্য বাদী হয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, উপজেলা ভ‚মি অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ওটরা গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেন হাওলাদারের ছেলে প্রভাবশালী ভ‚মিদস্যু ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম হাওলাদার ও তার স্ত্রী তাহ্সিনা মিলে উক্ত জমি চাষাবাদ জমির কথা বলে ভ‚মি অফিসে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরকারি খাল লীজ নিয়ে অন্যায় ভাবে দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। ৩৭ নং ওটরা মৌজায় ২০০,৩৫৯,৩৪৪ নং খতিয়ানে ৫৬৮,৫৭২,৫৯৬ নং দাগে ১৯ শতাংশ জমি অত্র এলাকায় প্রবাহিত খালের খাস সম্পত্তি বন্দোবস্ত লীজ নেয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহাদাত হোসেনের বাড়ির সম্মুখ থেকে শুরু করে মাহাতাব উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার সরকারি খাল দখল করে বাঁধ নির্মান করে। এতে করে ইরি বøকের পানি সেচ বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালে বাধ দেওয়ার কারণে খালটি পানি শূন্য হয়ে যায়। তাই বøকের সেচ পাম্প বন্ধ রয়েছে। পানির অভাবে ধানক্ষেত শুকিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। একাধিক পরিবার অভিযোগ করে বলেন, একমাত্র ওই খালে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বাধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের বাড়ির গাছপালা পানি স্বল্পতার কারণে মারা যাচ্ছে এবং প্রায়ই বাড়িতে পুকুর না থাকায় গোসল ও রান্নায় ব্যবহৃত পানির অভাবে দেখা দিয়েছে। স্থানীয় মৃত আঃ মজিদ হাওলাদারের ছেলে কবির হোসেন হাওললাদার এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ও বøক চাষের সফলতা পেতে কিছুদিন পূর্বে ওই খালটি নিজস্ব অর্থায়নে কাটার কার্যক্রম শুরু করলে প্রভাবশালী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে সৎ উদ্যোগেী কবির হোসেনকে তাড়িয়ে দেয়। আরো জানা যায়, নকশা ও কাগজপত্র অনুযায়ী উক্ত জমি বন্দোবস্তর অযোগ্য। শত বছরের কৃষি জমি ও পানি প্রবাহিত সরকারি খাল দখলমুক্ত রাখতে এলাকার শত শত পরিবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং তা দ্রæত বাস্তবায়নের জন্য কঠোর অন্দোলন কর্মসূচীর হুশিয়ারী দেয়। ভ‚ক্তভোগী কবির হোসেন হাওলাদার জানান, আমি শত বছরের পুরাতন প্রবাহিত খালটি রক্ষা করার জন্য নিজস্ব অর্থায়নে খাল খননের কার্যক্রম শুরু করলে সে আমাকে বাধার সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। হুমকির মুখে আমাদের প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। রফিকুল ইসলাম ইউপি সদস্য’র ক্ষমতার দাপটে একের পর এক সরকারি জমি দখলবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। অন্যের জমি দখল করা তার নেশা ও পেশা। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহাদাত হোসেন জানান, শত বছরের পুরাতন খাল বন্ধ করায় ইরি বøকে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। সরকারি খাল কখনো লীজ হয় কিনা আমার জানা নেই। রফিকুল ইসলাম ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে চাষাবাদের জমির নামে খাল লীজ নিয়ে এলাকার উন্নয়নে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। চাষীরা জমিতে পানি না পেলে ভয়ানব পরিস্থিতি হতে পারে। আরো জানা যায়, ৫৬৮,৫৭২ ও ৫৯৬ নং দাগ ও নকশায় ওই জমির উপর দিয়ে প্রবাহিত শত বছরের পুরনো খাল রয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদ জানান, সরেজমিনে তদন্ত করে বিষয়টি দেখা হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, তাই ওই প্রভাবশালী ভ‚মিদস্যুদের কবল থেকে সরকারি খাল দখলমুক্ত রাখতে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে দ্রæত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।