ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও সিলেট এমসি কলেজসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ থেকে ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের বিচারের জন্য ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মী।
সমাবেশে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আজকে আমার বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার মিডিয়ার সামনে এসে বলছেন- তার নিজ সংগঠনের ভাইয়েরা তাকে ধর্ষণ করেছে। ফেসবুকে লাইভে এসে আমার বোনকে পতিতা বলে প্রচারের ভয় দেখানো হয়। মামলার পর তারা তারা আবার ধর্ষকের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে বিক্ষোভ করে। কত বড় স্পর্ধা এদের। ছাত্রলীগ তাদের ছেড়ে দেবে না। ফেসবুকে অপপ্রচার না কের সাহস থাকলে সামনে আসেন।
তিনি বলেন, নুর ডাকসুর যত ভিপি আছে, সবার মর্যাদাহানি করেছে। গুজব বাহিনী দ্বারা তিনি ডাকসুর ভিপি হয়েছিলেন। কিন্তু আজকে দেখা যাচ্ছে এই নাটকবাজ নুর সবাইকে ভুল বুঝিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। নুরু গংরা শিবিরদের নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ গঠন করেছে, কিসের ছাত্র অধিকার পরিষদ? অপনারা তো এখন দেখছি ধর্ষক অধিকার পরিষদ।
ছাত্র অধিকার পরিষদকে উদ্দেশ্য করে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ইতিহাসে প্রথমবারর মতো এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষকের পক্ষে তারা বিক্ষোভ করেছে। তারা ধর্ষকের বিচারকে বানচাল করতে আন্দোলনে নেমেছে, রাজপথে মোকাবেলার হুমকি দিয়েছে। আপনারা এটাকে সরকার ও ছাত্রলীগের ষড়যন্ত্র বলছেন, অথচ এই মামলা করেছে আপনাদের সংগঠনের কর্মী। যেই কর্মী আপনাদের লড়াই আন্দোলনে রান্না করে খাইয়েছে। সেই ছাত্রী বোনকে আপনারা ধর্ষণ করেছেন। আপনাদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ছাত্রলীগের কেউ ধর্ষণ তো দূরের কথা, কেউ নারী সমাজের প্রতি বিন্দুমাত্র আড়চোখে তাকানোর সাহস করে, এমন কোনো কর্মী বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই। সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় সবার আগে কে আন্দোলন করেছে? সবার আগে ছাত্রলীগ সেখানে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই ধর্ষকদের বিচার না হবে , তারা কিন্তু আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি এখন সাবেক নাট্যকারে পরিণত হয়েছে। নুর আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, আমি নাকি মামলা করেছি। কিন্তু আমি ঐ বোনের পক্ষে মামলা করতে পারলে গর্বিত হতাম। আমরা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না, যেখানে কেউ ধর্ষণের স্বীকার হবে তার পাশে আমরা দাঁড়াবো।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, অতীতে আমরা কখনো একজন ধর্ষিতাকে প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে এসে বিচারের আর্তনাদ জাতির কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করতে দেখিনি। আজ আমরা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সেই শিক্ষার্থীকে স্যালুট জানাই। আমরা তাকে বলতে চাই তিনি উন্নত মম-শীর। তিনি সামাজিক ট্যাবুকে উপেক্ষা করে এটাই প্রমাণ করেছেন, লজ্জা তার নয় বরং লজ্জা তাদের যারা ধর্ষণ ও তার পৃষ্টপোষকতা করেছে।
এদিকে একই সময় জাতীয় জাদুঘরের সামনে একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে মানববন্ধন করেন ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান। এসময় তারা ধর্ষকের সবোচ্ছ শাস্তি মত্যুদণ্ডের দাবি জানান।
ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবীতে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল।
