ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ধরিত্রীকে বাঁচাতে শক্তিশালী বৈশ্বিক জলবায়ু জোট জরুরি।
তিনি বলেন, শতাব্দীর মধ্য ভাগের আগে বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করে জলবায়ুর ভারসাম্য আনতে শক্তিশালী জলবায়ু জোট প্রয়োজন।
বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) ‘থিম্পু অ্যামবিশন সামিট’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে প্রচারিত আগে রেকর্ডকৃত এক ভাষণে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভার্চ্যুয়াল এ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং কপ২৬ চেয়ার অলোক শর্মা এবং ইউএনএফসিসিসি’র নির্বাহী সম্পাদক প্যাট্রিশিয়া এসপিনোসা।
প্যারিস চুক্তির ৫ম বার্ষিকী উপলক্ষে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিশ্ব গড়ার গতি তরান্বিত করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে কয়েক মিলিয়ন জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচাতে জরুরি ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
চরম আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহিংস সংঘাতের চেয়েও অনেক বেশি লোককে বাস্তুচ্যুত করছে মন্তব্য করেন তিনি।
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্যের কথা স্মরণ করিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে সে লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান প্রচেষ্টা অত্যন্ত অপর্যাপ্ত। আমাদের নিজেদের এবং পৃথিবীকে বাঁচাতে বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন সীমাবদ্ধ করতে আমাদের জোরদার, গতিশীল ও কার্যকর কর্ম-পরিকল্পনা প্রয়োজন।
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত দেশগুলোর বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমডিবিস, আইএফআইএস-এর রেয়াতি অর্থায়ন এবং কর মওকুফের মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নে আরো জোরদার ব্যবস্থার জন্য এগিয়ে আসা উচিত এবং সবার জন্য প্রযুক্তির প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা উচিত।
জলবায়ুজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য দক্ষিণ এশিয়াকে সবচেয়ে দুর্বল অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রের স্তর এক মিটার বৃদ্ধি পেলে উপকূলীয় এবং ছোট দ্বীপগুলোর লাখ লাখ মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নে কোনো অবদান না থাকলেও মোকাবিলা করার সীমিত ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের জন্য বাংলাদেশ অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ।
বাংলাদেশে সবুজয়ানে নিয়মিত পদক্ষেপের পাশাপাশি যুগান্তকারী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে বাংলাদেশের সব জেলায় ১১.৫ মিলিয়ন গাছ রোপণ করা হচ্ছে।
পৃথিবীকে বাঁচাতে শক্তিশালী বৈশ্বিক জলবায়ু জোট জরুরিঃ প্রধানমন্ত্রী
